বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা এবং ভীনদেশি কোন নাগরিক যেন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হয় সেই লক্ষ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৫টি জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার সকল এলাকাকে বিশেষ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত পরিপত্র সংযুক্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান
বিজ্ঞপ্তিতেটিতে বলা হয়, বিশেষ এলাকাসমূহে ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য গত ২১ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় থেকে একটি নতুন পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এ নির্দেশনাটি রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য, যেখানে রোহিঙ্গা ও বিদেশী কোনো নাগরিক যাতে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হয়, সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
পরিপত্র-১ অনুসারে, প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের সহজে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য কক্সবাজার জেলার ৯টি উপজেলায় তিনটি ক্যাটাগরিতে ভোটার নিবন্ধনের প্রক্রিয়া ভাগ করা হয়েছে। এই তিন ক্যাটাগরি হলো ক্যাটাগরি-A, ক্যাটাগরি-B, এবং ক্যাটাগরি-C। প্রতিটি ক্যাটাগরির অধীনে ভোটার হতে চাওয়া ব্যক্তিদের জন্য আলাদা প্রমাণপত্র জমা দেওয়ার নিয়ম নির্ধারণ করা হয়েছে।
ক্যাটাগরি-A
যে সকল নাগরিক এসএসসি/সমমান বা তদুর্ধ্ব সনদধারী, তাদের জন্য উল্লেখিত প্রমাণপত্রগুলো জমা দিতে হবে: ১. এসএসসি বা সমমানের অনলাইন সনদ ২. ভেরিফাইয়েবল QR কোডযুক্ত অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ ৩. ভেরিফাইয়েবল QR কোডযুক্ত অনলাইন নাগরিকত্ব সনদ ৪. বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র
যদি এসএসসি বা তদুর্ধ সনদ না থাকে, তবে জন্ম নিবন্ধন সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, বাবা-মায়ের আঙুলের ছাপ যাচাই রিপোর্ট (AFIS), এবং স্থায়ী বাসিন্দা সনদ জমা দিতে হবে।
ক্যাটাগরি-B
ভূমিহীন ব্যক্তিদের জন্য ভূমিহীন সনদ, অনলাইন ভূমি উন্নয়ন করের রশিদ বা পর্চা জমা দিতে হবে।
ক্যাটাগরি-C
যদি নাগরিকের পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে, তবে সেগুলোর কপিও জমা দেওয়া যেতে পারে।
যে সকল নাগরিক ক্যাটাগরি A ও B এর অধীনে পড়বে না, তাদের নিবন্ধন কার্যক্রম উপজেলা ভিত্তিক বিশেষ কমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে ।
এছাড়াও পরিপত্রটিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার বিষয়ে যদি কেউ তাদের সহযোগিতা অথবা মিথ্যা তথ্য প্রদান, জাল কাগজপত্র সরবরাহ করে বা সংশ্লিষ্ট কারো গাফিলতি পরিলক্ষিত হয় তাদের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯, জাতীয়
পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০১০ এবং প্রচলিত অন্যান্য আইন অনুযায়ী ফৌজদারী মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান। মেয়র,চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর কর্তৃক রোহিঙ্গা বা ভিনদেশী কোন নাগরিককে নাগরিকত্ব সনদ ও জন্ম সনদ প্রদান করলে এবং তার ভিত্তিতে ভোটার নিবন্ধিত হলে সংশ্লিষ্ট মেয়র, চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে কক্সবাজারের মতো বিশেষ এলাকাগুলোতে ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, নির্ভুল এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পাঠকের মতামত